বিশেষ প্রতিবেদক, সংবাদচর্চা।
মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর যুবদল সভাপতি। রাজনীতির শুরু থেকেই মানুষের কল্যাণে সবসময় কাজ করেছেন যিনি। দলের স্বার্থে খেয়েছেন হামলা-মামলা আর দিন কাটিয়েছেন কারাগারে। রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা অর্থনৈতিক যেকোন বিষয় নিয়েই সবার আগে কথা বলেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় করোনা নিয়ে যখন সারা বিশ্ব ভীত তখন নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের জন্য কাজ করছেন খোরশেদ। সবমিলিয়ে মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ এই নেতা এখন ভাসছেন প্রশংসার জোয়ারে।
কেনো এতো প্রশংসা কাউন্সিলর খোরশেদের?
ঘটনা সূত্রে প্রকাশ, কয়েক মাস আগে যখন দেশে করোনা নিয়ে মানুষের তেমন কোন চিন্তা-ভাবনা ছিলো না ঠিক সেই সময় থেকেই কাউন্সিলর খোরশেদ গণমাধ্যমে বিবৃতি কিংবা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মানুষকে সচেতন হতে বলেছিলেন। করোনার বিস্তার রোধে কি কি করণীয় তা সম্পর্কে অবগত করেছিলেন। তারপর করোনা যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করেই ফেললো তখন শহরজুড়ে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি। যার মধ্যে ছিলো, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার ও হেক্সিসল। বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে নগরবাসীকে সচেতন করার চেষ্টাও ছিলো চোখে পরার মতো।
সূত্রমতে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে মারা গেছেন ৬ জন। আর ভাইরাসটির উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন প্রায় ১০ জন। যাদের মধ্যে কারও লাশ সারারাত পরে ছিলো আবার কারও লাশ পরেছিলো ঘন্টার পর ঘন্টা। অথচ করোনার ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। পাড়া-প্রতিবেশি তো দূরের কথা কোন কোন জায়গায় নিজের পরিবারের লোকজনও ছুয়ে দেখেনি মৃতদেহ। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই কাউন্সিলর খোরশেদের তরফ থেকে ঘোষণা আসে যে তিনি ও তার স্বেচ্ছাসেবী দল করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তার জানাযা ও দাফন কাফনের ব্যবস্থা করবেন। যেমন কথা তেমন কাজ। ঘোষণার পরদিনই শহরের জামতলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক ব্যাক্তি। খবর পেয়েই ছুটে যান খোরশেদ ও তার স্বেচ্ছাসেবী দল। বিছানা থেকে লাশ নামানো, মৃত লাশকে গোসল করানো, জানাযা এবং সবশেষ দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন করা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কাজই করেছেন কাউন্সিলর খোরশেদ ও তার স্বেচ্ছাসেবী দল।
করোনায় মৃত ব্যাক্তির দাফন-কাফনের কার্যক্রম অব্যহত রাখা হবে জানিয়ে কাউন্সিলর খোরশেদ সংবাদচর্চাকে বলেন, ১৩নং ওয়ার্ডের হিন্দু-মুসলিম-বোদ্ধ-খিস্ট্রান যে ধর্মের লোকই হোক না কেনো করোনায় আক্রান্ত হয়ে যদি কেউ মারা যায় তাহলে তার শেষ কীর্ত আমি করবো।
খোরশেদ আরও বলেন, ভয়কে জয় করে এই ক্রান্তিলগ্নে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আমরা করোনা প্রতিরোধ করতে পারবো না। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন আবার তিনিই মৃত্যুর মাধ্যমে দুনিয়ে থেকে আমাদের নিয়ে যাবেন। সুতরাং কোন কাজেই ভয় করা যাবে না। সকলকে ঘরে থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। আপনারা সকলে যে যার নিজ গৃহে অবস্থান করুন। তাহলেই আমরা করোনা জয় করতে পারবো ইনসাআল্লাহ।
করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তিকে দাফনের পর তার কাজের স্থীরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেন খোরশেদ। আর তারপর থেকেই অসংখ্য মানুষ সেখানে তাকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করেন। কেউ কেউ তার জন্য আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন আবার কেউ তাকে জাতীয় বীর বলেও মন্তব্য করেন। নগরবাসীর মতে, মরণঘাতি এই ভাইরাসের কারণে বাবার কাছে ছেলে আসতে পারছে না আবার ছেলের কাছে মা। অথচ, কাউন্সিলর খোরশেদ নিজের জীবনকে বাজি রেখে দিনের পর দিন কাজ করে চলেছেন। দেশের প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে এই কাউন্সিলর খোরশেদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। সত্যিকার অর্থে, খোরশেদ একজন আসল রাজনীতিবিদ এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর সুপার ম্যান। খোরশেদ ‘দ্যা সুপার ম্যান’।
সৈয়দ মোহাম্মদ রিফাত
স্পেশাল করসপনডেন্ট, দৈনিক সংবাদচর্চা।